আজ, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৪, সোমবার, কৃষ্ণনগর ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ‘এপিডিআর’ এবং ‘জলঙ্গী নদী সমাজ’-র পক্ষ থেকে ডেপুটেশন দেওয়ার কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিল।
জলঙ্গী নদীর বিসর্জন ঘাটের ডানদিকে নদীর বাঁধের উপর ‘রায় গুনাকর ভারতচন্দ্র পার্ক’ নামে একটা পার্ক নির্মিত হয়েছে। নদী আইন ও পরিবেশ আইন কে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে করে এই পার্কে একটি ফোয়ারা, রেস্তোরাঁ ও সেলফি জোন নির্মিত হয়েছে। ফোয়ারার জলের উৎস আবার পার্কের পাশ দিয়ে বয়ে চলা জলঙ্গী নদীই। ওই পার্কের উল্টোদিকে (বিসর্জন ঘাটের বামদিকে) অনুরূপ আর একটি পার্ক নির্মাণের ই-টেন্ডারও ইতিমধ্যেই ডাকা হয়েছে । কৃষ্ণনগর মিউনিসিপ্যালিটির সৌন্দ্যর্য্যায়নের অজুহাতে নদীর ecotone নষ্ট করে কংক্রিটের এই নির্মাণ নদী আইন ১৯৫৬ অনুযায়ী সম্পূর্ণরূপে বেআইনি।
তাই এই প্রশ্ন উঠছেই, এই পার্ক নির্মাণের সময় Soil test রিপোর্ট সর্বসম্মখে আনা হয়েছে কী ? BMC ও PBR সম্পর্কে জলঙ্গী নদী পাড়ের মানুষ কে জানানো হয়েছে কী ? সর্বোপরি আবার যখন এই পার্কের উল্টো দিকেই আরেকটি একইরকম বিনোদোন পার্ক তৈরি করার জন্য ই-টেন্ডার ডাকা হয়েছে তখন একবারও ফিরে দেখা হচ্ছে কী, যে জলঙ্গীর উপর নির্মিত পুরনো কৃষ্ণনগর রেল ব্রীজ তৈরি করার সময় নদীর বুকে যে কংক্রিটের আবর্জনা ফেলা হয়েছিল তা আজও তোলা হয়নি। মনে রাখা হচ্ছে কী, নির্মিয়মান নতুন সেতুটির তলায়ও জমা করা হচ্ছে প্রচুর পরিমাণ মাটি। দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থা কী সেই মাটি সরানোর ব্যবস্থা করছে ?
বর্তমানে জলঙ্গী নদী বহু জায়গায় খালের আকার নিয়েছে। কচুরীপানার বাড়বাড়ন্ত, অবৈধ ইটভাটা, নদীর উপর সেতু নির্মাণ, নির্মাণ ও প্লাস্টিক জনিত কঠিন বর্জ্য এবং দূষিত কালো জল নদী ও নদী পাড়ের (ecotone) জীববৈচিত্রকে দিনের পর দিন ধ্বংস করে চলেছে। এমত অবস্থায় জলঙ্গী নদী সমাজ এবং এ পি ডি আর – এর পক্ষ থেকে নিমক্ত দাবিগুলি করে আজ কৃষ্ণনগর ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে একটা ডেপুটেশন জমা দেওয়া হলো। আমাদের দাবিগুলি হলো:
১)জলঙ্গী পাড়ে বিসর্জন ঘাট সংলগ্ন প্রস্তাবিত বিনোদন পার্ক নির্মাণ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
২)নদী ও পরিবেশ আইনভঙ্গকারী ভারত চন্দ্র রায়গুনাকর পার্ক বন্ধ করতে হবে।
৩)নদী বাঁধের উপর অবৈধ ভাবে ফোয়ারা, সেলফি জোন, রেস্তোরাঁ দিয়ে পার্ক তৈরী করলে কার স্বার্থে পৌরসভা জবাব দাও।
৪)পৌরসভা, জলঙ্গীর বাঁধের উপর নির্মিত বেআইনি বিনোদন পার্ক বাতিল করো। নতুন করে পার্ক তৈরীর ই-টেন্ডার বাতিল করো।
ডেপুটেশনের পর সন্ধ্যায় কৃষ্ণনগর শহর জুড়ে চললো অবৈধ নির্মাণের বিরুদ্ধে পোস্টারিং।