গতকাল যাদবপুর কমিউনের প্রীতিলতার পাঠশালা, আশু তিমিরের পাঠশালা ও ভগৎ সিং-এর পাঠশালার পড়ুয়া ও শিক্ষক শিক্ষিকারা তাদের পত্রিকা ‘চরকি’ ও ফিলিস্তিনের বাচ্চাদের উপর নেমে আসা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে পাঠশালার বাচ্চাদের আঁকা কিছু পোস্টার নিয়ে বইমেলায় লিটিল ম্যাগাজিন প্যাভিলিয়নের সামনে বসলে, তাদের উপর আক্রমণ চালায় ইসকন, শপিজেন বাংলা, পুলিশ এবং গিল্ড কর্তৃপক্ষ। পয়সা দিয়ে স্টল বুক করা হয়নি বলে বের করে দেওয়া হয়। একই সাথে, ফিলিস্তিনের মুক্তির দাবিতে পোস্টার রাখায় তাদের বলা হয় তারা শিশুদের নিয়ে ব্যবসা করছে, ব্যবহার করছে। পাঠশালার পড়ুয়াদের ধমকিয়ে, হুমকি দিয়ে, শিক্ষকদের মেরে ধরে বের করা হয় মেলা প্রাঙ্গণ থেকে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ বইমেলায় বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীরা আজ লিটিল ম্যাগাজিনের প্যাভিলিয়নে মিছিল করছিল। আকস্মিক পুলিশের বিশাল বাহিনী এসে পৌছায় এবং মিছিলের পথ আটকায়। এরপর মিছিল না করতে দেওয়ার জোরজুলুম শুরু হয়, হুমকি, ধাক্কাধাক্কি এবং প্রতিবাদে সামিল কর্মীদের গায়ে হাত পর্যন্ত তোলা হয়। “বই পড়ুন, কিনুন চলে যান। এখানে মিছিল করার জায়গা নয়।” অগণতান্ত্রিক পুলিশ বাহিনীর তরফ থেকে বারবার এই ধরনের হুমকি শোনা যায়। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা পাল্টা প্রশ্ন করেন, বই মেলায় যদি মিছিল নিষিদ্ধ হয়ে থাকে, তাহলে সেই আদেশের লিখিত কাগজ কোথায় ? পুলিশ আধিকারিক কোনভাবেই লিখিত নির্দেশ দেখায়নি, বরং হুমকি দিতে থাকে একের পর এক।
এরপর বিশাল পুলিশ বাহিনী এই সামান্য কয়েকজনের মিছিলের উপর শক্তি প্রদর্শন করে, ধ্বস্তাধ্বস্তি শুরু হয়। অপর্যাপ্ত মহিলা পুলিশ থাকা সত্ত্বেও মিছিলকারী মহিলাদের উপর দুর্ব্যবহার করে পুরুষ পুলিশবাহিনী। এরপর ঠেলে, হিঁচড়ে ১৪ জন কে মেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে আটক রাখে। পরবর্তীতে বিধাননগর নর্থ থানায় নিয়ে গিয়ে আটকে রাখে। আটক ব্যাক্তিদের নাম – ইন্দ্রানুজ রায়, অভিনব দাস, ঋতম সরকার, রাজা সরখেল, পরমেশ গুহ, অপূর্ব রায়, সৌভিক মুখার্জি, অমিতাভ সেনগুপ্ত, শঙ্খদীপ দাস, শুভাশিস শীট, তন্ময় বিশ্বাস, অরিজিত সাহা, সিমরানজিত চক্রবর্তী, অনুপম মিস্ত্রি।
রাত ১০ টা নাগাদ কয়েকজন কে ছাড়লেও, রাত ১১টা ৩০ মিনিটেও শঙ্খদীপ দাস ও অভিনব দাস দুজনকে ছাড়া হয়নি। তাদের মুক্তির দাবী নিয়ে থানার সামনে এখনও অবস্থানরত ৩০ জন।