প্রেস বিজ্ঞপ্তি

আপনারা ইতিমধ্যে অবহিত আছেন “নদী বাঁচাও জীবন বাঁচাও আন্দোলন” ধারাবাহিকভাবে নদীর অবিরল-নির্মল ধারার পক্ষে সোচ্চার। হিমালয় তথা পাহাড়ে নদীর উচ্চ গতিতে নদীতে বাঁধ বেঁধে আটকে রাখা আজ বৈজ্ঞানিকভাবে ব্যর্থ এবং ভ্রান্ত প্রমাণিত হয়েছে। প্রায় সমগ্র হিমালয় সিসমিক জোনের তালিকায়  IV তে আছে। এমন অঞ্চলে বাঁধ শুধু অবৈজ্ঞানিক নয় বিপদজনক। ও সেই বিপদ বারবার নেমে আসছে সাধারণ ভারতবাসীর দৈনন্দিন জীবনে। উত্তরাখণ্ড,কাশ্মীর হিমাচলের পর এবার সিকিমে বিপর্যয় নেমে এসেছে। হরপা বান যা আসলে নদীর স্বাভাবিক চরিত্র, নেমে এসেছে কখনো অলোকনন্দা,মন্দাকিনী,পার্বতী, যমুনা নদীতে, তো কখনো তিস্তা নদীতে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে।

গত চার অক্টোবরের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৩ জন জওয়ানসহ একশো মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হলেও কোন সঠিক তালিকা সরকার বা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি। সাধারণ সিকিমবাসীর কত মানুষ এবং তাদের কে ঘিরে তাদের সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি তা জানা জায়নি এখনো। এই সমস্ত বিপর্যয়ের প্রধান কারণ “বাঁধ” বলে আমরা মনে করছি। উচ্চ গতিতে নদী কে আটকে রেখে এই “বাঁধ” নামক উন্নয়নের ধারণা আসলে মুনাফা লোভী কতিপয় ব্যবসায়ীদের জন্য। রাজ্য ও কেন্দ্র প্রশাসন এই ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখতে চাইছে। যা চীন,রাশিয়ার মতন কতিপয় দেশ ব্যাতিত  বিশ্ব জুড়ে বাতিল হয়েছে। আমরা তাই আপনাদের বহুল প্রচারিত সংবাদ মাধ্যমের দ্বারা নিম্নোক্ত দাবি কে প্রশাসনের কাছে ও সাধারণ ভারতবাসীর সামনে তুলে ধরতে চাইছি।

এক) অবিলম্বে কত মানুষ এই ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন তাদের পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করতে হবে। তাদের পুনর্বাসনের সুষ্ঠু সুস্থ পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে এবং তাকে বাস্তবায়িত করতে হবে।

দুই) অবিলম্বে হিমালয় বাঁধ নির্মাণ কে নিষিদ্ধ করতে হবে ও তথাকথিত কংক্রিটের উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

তিন) আমরা সকলে অবহিত যে ভারতের জলবায়ু, প্রকৃতি-পরিবেশ ও জীবন প্রবাহ হিমালয়ের দান। সেই হিমালয়কে ধ্বংস করে নদীকে বাঁচানো সম্ভব নয়। নদীর উৎস মূলত হিমালয়ের হিমবাহ আর হিমালয়ের বনাঞ্চল। কিন্তু ভ্রান্ত উন্নয়নের শিকার হিমালয় আর হিমালয়ের উৎপন্ন অসংখ্য নদী-নালা-ঝোরা। মানুষ ও জৈববৈচিত্র্যের সুস্থায়ী মঙ্গলের জন্য হিমালয় নীতি গ্রহণ করা হোক। হিমালয়ের প্রাকৃতিক পরিবেশ বজায় থাকুক।

ধন্যবাদ সহ

তাপস দাস

কল্লোল রায়

জাতীয় আহ্বায়ক

নদী বাঁচাও জীবন বাঁচাও আন্দোলন 

আরও পড়ুন – ‘লাইভ এন্ড এক্সক্লুসিভ’ ও ‘মেঘ ভাঙা বৃষ্টি’র বাইরে দাঁড়িয়ে যা বলার