অনুশীলন সমিতির অনতম সংগঠক ও বিপ্লবী ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তীর জীবনী গ্রন্থ ‘বাংলার মহারাজ ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী’ এর লেখক ফয়সাল আহমেদ কে কলকাতায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ফয়সাল আহমেদ ঢাকা থেকে প্রকাশিত নদী বিষয়ক অনলাইন-রিভার বাংলা ও বই বিষয়ক ত্রৈমাসিক পত্রিকা ‘এবং বই‘এর সম্পাদক।
এছাড়াও ‘মহারাজ ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী অ্যান্ড মার্টার যতীন দাস মেমোরিয়াল কমিটি’র পক্ষ থেকে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ১১ এপ্রিল ২০২৩। দিনের প্রথম কর্মসূচি কলকাতার কেওড়াতলায় ত্রৈলোক্যনাথের স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন লেখক ফয়সাল আহমেদ। এ সময় তার সঙ্গে মেমোরিয়ালের পক্ষে কেওড়াতলা মহাশ্মশানে মহারাজের আবক্ষ মূর্তিতে মাল্যদান করেন সুধীর রঞ্জন রায়, সভাপতি ও সৌমেন গঙ্গোপাধ্যায়, সাধারণ সম্পাদক এবং কার্যকরী কমিটির সদস্য দেবাশীষ মুখোপাধ্যায়, শিব নারায়ণ বোস, নদীকর্মী তাপস দাস, রাজনীতিক মৃন্ময় সেনগুপ্ত, ছাত্রনেতা নওফেল মোহাম্মদ সফিউল্লাহ্ ও জীবন প্রবাহ ট্রাস্টের সংগঠকেরা।
তারপর কুঁদঘাটের ঐতিহাসিক অনুশীলন ভবনে হয় সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠান। এখানেই সংরক্ষিত আছে ত্রৈলোক্যনাথের শবাধার,মহারাজকে দেওয়া বিভিন্ন সংগঠনের সম্মাননা পত্র, তার ব্যবহৃত জামা-কাপড়,বই, চলার সময় ব্যবহৃত লাঠি, বিপ্লবী আন্দোলনের দুষ্প্রাপ্য নানা গ্রন্থ। এবং বিপ্লবীদের দুষ্প্রাপ্য বাঁধানো ছবি।
ফয়সাল আহমেদ তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মহারাজ ও অনুশীলন সমিতির গুরুত্ব সম্পর্ক আলোচনা করেন। তার আগে সমিতির সদস্যরা তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। লেখককে বরণ করেন ফুলের তোরা দিয়ে ঋত্বিকা সরকার ও মুক্তি যোদ্ধা অধুনা ভারতের নাগরিক কবি অরুণ ভট্টাচার্য।
এরপর দেশাত্ববোধক সঙ্গীত পরিবেশন করেন দিলীপ দাস। এছাড়াও কবি অরুণ ভট্টাচার্য ছড়া পাঠ করেন।
সবশেষে কলকাতার টালিগঞ্জে চন্ডীতলা লেনের মহারাজ ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী অ্যান্ড মার্টার যতীন দাস মেমোরিয়াল কমিটির ভবনে ফয়সাল আহমেদকে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়। স্বাধীনতা সংগ্রামের আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। মেমোরিয়াল কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৌম্যেন গঙ্গোপাধ্যায়ের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সুধীর রঞ্জন রায়।
মেমোরিয়াল কমিটির দেওয়া সম্মাননা স্মারকে বলা হয়, “বাংলার মহারাজ ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্ত্তী’ গ্রন্থের রচয়িতা, গবেষক ফয়সাল আহমেদ কে তার সাহিত্য লেখনির সফলতম অবদানের জন্য অভিনন্দন জানাই।”
অনুষ্ঠানে সূচনা সঙ্গীত পরিবেশন করেন মহুয়া রায়। স্বাগত ভাষণ দেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌমেন গঙ্গোপাধ্যায়। উত্তরীয় সহযোগে অভ্যর্থনা জানান শিব নারায়ণ বোস, ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করে তৃষা দে। সঙ্গীত পরিবেশন করেন কাকলি মজুমদার, সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন সুধীর রঞ্জন রায়, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সৌমেন গঙ্গোপাধ্যায়।
অনুষ্ঠানে সংগঠনের সদস্য ছাড়াও লেখক, কবি, শিল্পী ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। তার আগে অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে মহারাজ ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তীর মূর্তিতে মাল্যদান করেন ফয়সাল আহমেদ। যতীন দাস এর মূর্তিতে সুধীর রঞ্জন রায় ও জীবন প্রবাহ ট্রাস্টের পক্ষে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর আবক্ষ মুর্তিতে মাল্যদান করেন বর্ষিয়াণ কবি নাট্যকার ভবেশ জানা।
‘বাংলার মহারাজ ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী’ গ্রন্থের প্রকাশ :
১৩ এপ্রিল ফয়সাল আহমেদ এর বাংলার মহারাজ ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী গ্রন্থটির দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয় কলেজ স্ট্রিট কফি হাউসের দ্বিতলে বই-চিত্রে। কথাশিল্পী সাধন চট্টোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে । অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন লেখক ও সম্পাদক গৌতম রায়, লেখক রোকসানা কাজল, রাজনীতিক মৃন্ময় সেনগুপ্ত, জীবন প্রবাহ ট্রাস্টের জয়ন্ত ঘোষ।
অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কলকাতা ও কলকাতা সংলগ্ন বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পনেরো জন কবি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী, বর্ষিয়াণ সাংবাদিক, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্ব শ্রী নিরঞ্জন হাল।
পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন গল্পকার ও কবি রাজু বিশ্বাস।